প্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আমাদের সবারি উচিত একটি পাসপোর্ট বানিয়ে রাখা। কারণ কখন কোন ইমারেন্সিতে পাসপোর্ট লেগে যায়। তাই আমি আজকে লিখবো ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪ সালে। আজকের আরটিকেলটি ভালো ভাবে পড়লে আপনি নিজেই সব কাগজ রেডি করতে পারবেন।
বাংলাদেশ অনেক আগে থেকেই ই-পাসপোর্ট বানানো শুরু করেছে। এখন আপনি পাসপোর্ট করলে নিঃসন্দেহে আপনার পাসপোর্টটি ই-পাসপোর্ট হবে। তাই এই পাসপোর্ট এ কোন ভূল তথ্য দেওয়া যাবে না। সব কিছু আগে থেকে গুছিয়ে রাখলে বেশি জামেলায় আপনাকে পড়তে হবে না। তো চলুন বেশি কথা না বারিয় যেনে নেই ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪ সালে।
ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪
ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪ সালে যদি বলতে যাই তাহলে বলতে হবে সবার আগে আপনাকে অনলাইনে আপনার পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। তারপরে অন্যান্য কাজ।
অনলাইন আবেদন ফরম পূরন করা হয়ে গেলে আবেদন ফরমটির কপি বের করে রাখতে হবে। এর পরের কাজ হলো ব্যাংক এ পাসপোর্ট ফি প্রদান করা। পাসপোর্ট ফি প্রদান করলে আপনাকে একটি চালান দিবে ব্যাংক থেকে সেটা সাবধানে রাখতে হবে।
এরপরের কাজগুলো হলো আপনার কিছু কাগজপত্র গুছানো। বেশি কিছু প্রয়োজন নেই। আপনি ভোটার হলে NID কার্ড এর সত্যায়িত ফটোকপি আর অরিজিনাল কপিও সাথে রাখবেন। আর তা না হলে জন্মনিবন্ধন আর স্কুল সার্টিফিকেট এর সত্যায়ীত কপি।
আর আপনার পাসপোর্ট সাইজে ছবি লাগবে। পারলে ১২ কপির মতো সত্যায়িত ছবি সাথে রাখবেন। এখন সত্যায়িত কিভাবে করতে হবে তা না জানলে আমি নিচে লিখে দিবো একটু দেখে নিয়েন।
এগুলোর পরেও আরো কিছু কাগজপত্র সাথে রাখা ভালো। কাগজগুলো হচ্ছে আপনি যে বাসায় থাকেন তার কারেন্ট বিলের কাগজ। আর আপনার গ্রামের বাড়ি থেকে একটি চারিত্রিক এবং নাগরিক সনদ পত্র নিবেন।
আমি নিচে ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪ সালের সবকিছু ভালো ভাবে বর্ননা করে লিখে দিচ্ছি।
ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪ (পুরো ইনফো)
ই-পাসপোর্ট পেতে হলে আপনাকে সবার আগে আবেদন ফরম পূরন করতে হবে। আপনি আবেদন ফরমটি অনলাইনেই পেয়ে যাবেন। তাও আমি নিচে লিঙ্ক দিয়ে দিচ্ছি। আবেদন লিঙ্ক।
আরও পড়ূনঃ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট কিভাবে পাবো।
আরও পড়ূনঃ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট অনলাইন চেক করার উপায়।
ই-পাসপোর্ট আবেদন ফরম
অনেকে আছে যারা ই-পাসপোর্ট এর জন্য অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ করতে হয় কিভাবে তা জানে না। তাই আমি নিচে ই-পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণের জন্য একটি নির্দেশনাবলী লিঙ্ক দিয়ে দিচ্ছি। লিঙ্ক এ ক্লিক করে পরে দেখে নিন কিভাবে আবেদন ফরম পূরণ করবেন। https://www.epassport.gov.bd/instructions/instructions
ই-পাসপোর্ট আবেদন ফি প্রদান
অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ হয়ে গেলে আপনাকে একটি আইডি দেওয়া হবে। আপনি ওই আইডি বা বেশি জামেলা না করে সব কাগজ সাথে নিয়ে ব্যাংক এ যেতে হবে। সোনালি ব্যাংক হলে বেশি ভালো হয়। ব্যাংকে এ যেয়ে কাগজগুলো জমা দিয়ে নির্ধারিত ফি দিলে তারাই আপনার আবেদন ফি সরকারকে দিয়ে দিবে।
আর আপনাকে একটি চালান এর কাগজ দিবে। এর চালান এর কাগজ আর আবেদন ফরম একসাথে পিন মেরে রাখবেন। অনেকে হয়তো জানে না পাসপোর্ট আবেদন ফি ২০২৪ সালে কত টাকা। চিন্তা করার প্রয়োজন নেই পড়তে থাকেন নিচে লিখা আছে।
ই-পাসপোর্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ
উপরের ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪ সালে তা তো ভালো ভাবে বুঝছেন। এখন আলোচনা করবো আরো কিছু প্রয়জোনীয় কাগজ পত্র নিয়ে।
ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪ সালেঃ
১। আপনার যদি NID কার্ড হয়ে থাকে তাহলে কার্ডের সত্যায়িত কপি। আর জনি আপনি ১৮ বছরের কম হয়ে থাকেন তাহলে আপনার বাবা মায়ের বর্তমান ছবি এবং ভোটার আইডি কার্ডের সত্যায়িত কপি।
২। আপনি যে বাসায় বা বারিতে থাকেন সেখানকার একদম নতুন কোন কারেন্ট বিলের কাগজ নিয়ে যেতে হবে।
৩। আপনি যে এলাকায় থাকেন বা সেখানে মূলত বাড়ী সেখান কার চেয়ারম্যান এর কাছ থেকে চারিত্রিক সনদপত্র এবং নাগরিক সনদপত্র নিয়ে যেতে হবে।
এই ছিলো ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪ সালের কিছু বার্তি কাগজপত্র। এগুলো আপনি সঙ্গে নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে গেলেই হবে।
ই-পাসপোর্ট ফি কত ২০২৪
পাসপোর্ট ফি মূলত পাসপোর্ট কত বছর মেয়াদি হবে এবং কত পৃষ্ঠার মধ্যে হবে আর হচ্ছে কত দিনের মধ্যে পাসপোর্ট বানিয়ে নিবেন তার উপর নির্ভর করে।
পাসপোর্ট আপনি তিনটি সময়ের ভিতরে নিতে পারবেন। ১।অতি জরুরি ২ দিন ২। জরুরি ১০ দিন। ৩। সাধারণ ২১ দিন।
আর পৃষ্ঠার কথা বললে পাসপোর্ট সাধারনত ৪৮ পৃষ্ঠা এবং ৬৪ পৃষ্ঠার হয়ে থাকে।
আর মেয়াদ হলো ৫ বছর মেয়াদি এবং ১০ বছর মেয়াদি।
৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট ফি ২০২৪
৪৮ পেজঃ
অতি জরুরি ৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট ফি হলো ৮ হাজার ৬২৫ টাকা। জরুরি পাসপোর্ট এর ফি ৬ হাজার ৩২৫ টাকা এবং সাধারণ পাসপোর্ট আবেদন এর ক্ষেত্রে লাগবে ৪ হাজার ২৫ টাকা।
৬৪ পেজঃ
৬৪ পেজ এর পাসপোর্ট করতে বেশি টাকার তফাত না। সাধারন পাসপোর্ট এর জন্য ৬ হাজার ৩২৫ টাকা। আর জরুরি পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে ৮ হাজার ৬২৫ টাকা। আর অতি জরুরি পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে ১২ হাজার ৭৫ টাকা লাগে।
বিদ্রঃ সব ফি এর সাথেই আলাদা ভাবে ১৫% ভ্যাট যুক্ত করতে হবে।
১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট ফি ২০২৪
৪৮ পেজঃ
সাধারণ পাসপোর্ট ফি ৫ হাজার ৭৫০ টাকা এবং জরুরি পাসপোর্ট এর ফি হলো ৮ হাজার ৫০ টাকা। আর অতি জরুরি পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে দিতে হবে ১০ হাজার ৩৫০ টাকা।
৬৪ পেজঃ
১০ বছর মেয়াদি ৬৪ পেজের সাধারণ পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে দিতে হবে ৮ হাজার ৫০ টাকা এবং জরুরি পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে লাগবে ১০ হাজার ৩৫০ টাকা এবং অতি জরুরি পাসপোর্ট নিতে চাইলে দিতে হবে ১৩ হাজার ৮০০ টাকা।
বিদ্রঃ আপনি যদি ১৮ বছরের নিচে কিংবা ৬৫ বছরের উপরে থাকেন তাহলে আপনি ৫ বছর মেয়াদের বেশি মেয়াদি পাসপোর্ট পাবেন না।
পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন ফরম পূরনের পরে কি করবো
ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪ সালে তা তো আপনারা জানলেনি এখন কাজ হলো উপরের লিখা অনুযায়ী সব ডকুমেন্ট রেডি করা এবং সব গুলো একসাথে পিন করে পাসপোর্ট অফিসে যাওয়া।
পাসপোর্ট অফিসে আসার পরে দেখবেন আপনার হাতে যে কাগজ আছে তা কোথায় জমা নিচ্ছে সেখানে যেয়ে লাইন দিবেন। তারপরে আপনার কাগজ নিবে। জমা নেওয়ার পরে সব ঠিক থাকলে আপনাকে ভিতরে পাঠাবে ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং রেটিনা দেওয়ার জন্য।
ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং রেটিনা দেওয়া হয়ে গেলে আপনাকে একটা স্লিপ দেওয়া হবে। স্লিপটি যত্ন সহকারে রাখবেন। কারণ পাসপোর্ট নিতে এই স্লিপটি লাগবে।
স্লিপ পেয়ে গেলে ধরেই নিবেন যে আপনার পাসপোর্ট বানানো শুরু হয়ে গেছে। আপনাকে যে তারিখে আবার পাসপোর্ট অফিসে যেতে বলা হবে সেই তারিখে অফিসে গিয়ে স্লিপ দিয়ে পাসপোর্ট নিয়ে নিবেন।
সর্বশেষ, আশা করি ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪ সালে তা আপনারা জানতে পেরেছেন। আর কোন প্রকার প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করবেন। আমি যত দ্রুত সম্ভব আপনাদের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার চেষ্ঠা করবো। আর সবাইকে ধন্যবাদ আরটিকেলটি শেষ পর্যন্ত পরার জন্য।
4 thoughts on “ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪”