অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ ।

প্রিয় পাঠকবৃন্দ আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। অনেকে হয়তো বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশিদের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দিচ্ছে। তাই আমি আজকে অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সালে কিভাবে যাবেন বা কি কি দক্ষতার প্রয়োজন হবে তা নিয়ে বিস্তারিত লিখবো। মনোযগ সহকারে আরটিকেলটি পড়লে আপনাদের যত প্রকার প্রশ্ন আছে আশা করি সবগুলোর উত্তর জানতে পারবেন।

তো চলুন বেশি কথা না বারিয়ে আজকের মূল টপিক অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সালে কিভাবে কি করতে হবে তা দেখে নেই। সবার কাছে অনুরধ থাকবে মনোযগ সহকারে পড়ার জন্য। একটু সময় লাগলেও আপনারা সবকিছু জানতে পারবেন।

Table of Contents

অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪

অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ নিয়ে অনেকেরি অনেক মতামত থাকতে পারে তবে আমি ধাপে ধাপে লিখে দিচ্ছি ওয়ার্ক পারমিট পেতে আপনার কি কি করতে হবে। সবার প্রথমে আপনাকে জানতে হবে অস্ট্রেলিয়া কি ধরনের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দিচ্ছে। তো চলুন আমরা অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সালের প্রথম ধাপটি জেনে নেই।

অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সালে কি ধরনের ভিসা দিচ্ছে

অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সালে ৩ ধরনের ভিসা দিচ্ছে। এই ৩ ধরনের ভিসা কি কি তা আমি লিখে দিচ্ছি আপনারা দেখে নিন। আমি প্রত্যেকটি ভিসার পুরোপুরি বিস্তারিত নিচে বলে দিবো এখন আগে জেনে নেই ৩ টি ভিসা কি কিঃ

  • সর্ট স্টে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা।
  • টেম্পোরারি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা।
  • পারমানেন্ট বা স্থায়ী ওয়ার্ক পামিট ভিসা।

এই তিন টি ক্যাটাগরির ভিসা দিচ্ছে বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া। এই তিনটির ভিতরে আবার অনেক কাজের ধরণ আছে। আপনার দক্ষতা অনুযায়ি আপনি ভিসার জন্য এপ্লাই করবেন। তো চলুন এই তিনটি ভিসার মধ্যে পার্থক্য কি এবং আপনি কোনটায় আবেদন করবেন। আগে আমি পার্মানেন্ট ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়েই আলোচনা করবো।

আমি এখানে পারমানেন্ট ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এবং টেম্পোরারি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে কথা বলবো। কারণ হলো সর্ট স্টে ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য এখন আর আবেদন করা যাচ্ছে না বাংলাদেশ থেকে।

অস্ট্রেলিয়া স্থায়ী ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪

অস্ট্রেলিয়া স্থায়ী ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪

আপনাকে যদি অস্ট্রেলিয়া স্থায়ীভাবে থাকতে হয় তাহলে আপনাকে অস্ট্রেলিয়ার পারমানেন্ট রেসিডেন্স নিতে হবে। অস্ট্রেলিয়া স্থায়ী ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সালে ৫ ধরনের ভিসা আছে। আমি অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সালের স্থায়ী ওয়ার্ক পারমিট ভিসার পাচটি ক্যাটাগরি সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা করে দিচ্ছি।

১। রিজিওনাল স্পন্সর মাইগ্রেশোন স্কীম (সাবক্লাস ১৮৭) ২। ইমপ্লোয়ার নমিনেশন স্কীম (সাবক্লাস ১৮৬) ৩। স্কীল্ড ইন্ডিপিন্ডেন্ট ভিসা (সাবক্লাস ১৮৯) ৪। স্কীল্ড নমিনেটেড ভিসা (সাবক্লাস ১৯০) এবং ৫। স্কীল্ড রিজিয়োনাল ভিসা (সাবক্লালস ৮৮৭)

এই ভিসাগুলো সম্পর্কে জানার আগে আপনাকে একটা পেজ আগে থেকে ওপেন করে রাখতে হবে। আর পেজটি হলো অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সালের স্কীল্ড ওক্কুপেশন লিস্ট

রিজিওনাল স্পন্সর মাইগ্রেশোন স্কীম (সাবক্লাস ১৮৭)

আপনি অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সালের সাবক্লাস ১৮৭ এই ভিসার সবগুলো ক্যাটাগরিতে আবেদন করতে পারবেন না। বাংলাদেশ থেকে যেই ভিসায় আবেদন করা যাবে সেটা লিখছি।

টেম্পোরারি রেসিডেন্স ট্রান্সিশোন স্ট্রীম

এই ভিসায় যারা বাংলাদেশে বর্তমানে কোন ভালো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন তারা এপ্লাই করতে পারবেন।

১। এই ভিসা পেতে হলে আপনাকে আবশ্যই একজন সাবক্লাস ৪৫৭ বা ৪৮২ এর যোগ্যতা সম্পন্ন ওয়ার্কার হতে হবে।
২। এই ভিসায় এলে আপনি অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে থাকতে পারবেন।
৩। যেতে খরচ হবে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩,২৭,৬৪১ টাকা
৪। ভিসা প্রসেসিং এর সময় আপনার স্থানের উপর নির্ভর করে।

ইমপ্লোয়ার নমিনেশন স্কীম (সাবক্লাস ১৮৬)

ইমপ্লোয়ার নমিনেশন স্কীম (সাবক্লাস ১৮৬)

অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সালের সাবক্লাস ১৮৬ এর তিনটি ক্যাটাগরিতে আবেদন করতে পারবেন। আমি তিনটি ক্যাটাগরিই নিচে বিস্তারিত ভাবে লিখে দিচ্ছি।

ইমপ্লোয়ার নমিনেশন স্কীম (সাবক্লাস ১৮৬)

অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সালের সাবক্লাস ১৮৬ এ বাংলাদেশ থেকে তিনটি ক্যাটাগরিতে আবেদন করতে পারবেন। ১। ডিরেক্ট এন্ট্রি স্ট্রীম ২। লেবার এগ্রিমেন্ট স্ট্রীম ৩। টেম্পোরারি রেসিডেন্স ট্রান্সিশোন স্ট্রীম।

ডিরেক্ট এন্ট্রি স্ট্রীম।
১। আপনাকে অব্যশ্যই অস্ট্রেলিয়া বর্তমানে থাকে এবং ভালো কোয়ালিটির একটি চাকরি করছে তার কাছ থেকে নমিনেটেড হতে হবে।
২। আর আপনার কাজ, অস্ট্রেলিয়ার চাওয়া কাজের লিস্টের ভিতরে থাকতে হবে।
৩। আপনাকে ইংরেজিতে ভালো কথা বলা শিখতে হবে।

লেবার এগ্রিমেন্ট স্ট্রীম।
এই ভিসায় আবেদন করতে আপনার শুধু লেবার এগ্রিমেন্ট থাকলেই হবে। আপনি বর্তমানে কোথায় কাজ করছেন অথবা আগে কোন কম্পানিতে কাজ করছেন সেখান থেকে লেবার এগ্রিমেন্ট নিতে হবে।

টেম্পোরারি রেসিডেন্স ট্রান্সমিশোন স্ট্রীম।
আপনি অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সালের এই ভিসায় আবেদন করতে চাইলে অবশ্যই একজন স্কীল্ড ওয়ার্কার হতে হবে।

১। আপনার ৪৫৭ টিএসএস থাকতে হবে।
২। আপনাকে যেকোন একটি ভালো কোম্পানিতে ২ বছরের জন্য ফুল টাইম কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। আর আপনার সাথে যারা চাকরি করবে তাদের কাছ থেকে ফিডবেক নেওয়া হবে এবং ফিডবেক অব্যশ্যই ভালো হতে হবে।

এখন বলি যেতে কত টাকা খরচ হতে পারে। এই প্রত্যেকটি ভিসায় আবেদন করে অস্ট্রেলিয়া যেতে আপনার ৩, ২৮,৮১০ টাকা লাগবে।

স্কীল্ড ইন্ডিপিন্ডেন্ট ভিসা (সাবক্লাস ১৮৯)

অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সালের সাবক্লাস ১৮৯ এ আপনি মাত্র একটি ক্যাটাগরিতেই আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু এই একটি ক্যাটাগরিতেই আপনি সহজেই ভিসা পেয়ে যাবেন।

স্কীল্ড ইন্ডিপিন্ডেন্ট ভিসা (সাবক্লাস ১৮৯)

এখানে আপনি শুধু পয়েন্ট টেস্টেড স্ট্রীম ভিসায় আবেদন করতে পারবেন। কি লাগবে পয়েন্ট টেস্টেড স্ট্রীম ভিসায় আবেদন করতে চলুন জেনে নেই।

১। এখানে সবথেকে বড় শুবিধা হলো আপনার কোন স্পন্সর বা নমিনেটর এর প্রয়োজন হবে না।
২। আপনাকে আবেদন করার জন্য অস্ট্রেলিয়ার কোন কম্পানি থেকে ইনভাইটেড হতে হবে।

স্কীল্ড নমিনেটেড ভিসা (সাবক্লাস ১৯০)

অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সালের সাবক্লাস ১৯০ এই ভিসার ক্যাটাগরি মাত্র একটিই। সবার জন্যই একটি ভিসার ক্যাটাগরি।

স্কীল্ড নমিনেটেড ভিসা (সাবক্লাস ১৯০)


১। আপনার কাজ অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া স্কীল লিস্টের যেকোন একটির সাথে মিলতে হবে।
২। আপনার কিছু সুইটেবল স্কীল এসেসমেন্ট থাকতে হবে। সুইটেবল এসেসমেন্ট।
৩। আপনাকে অস্ট্রেলিয়ায় কাজের জন্য ইনভাইটেড হতে হবে।
৪। ভালো একটি টেস্ট পয়েন্ট পেতে হবে।

স্কীল্ড রিজিয়োনাল ভিসা (সাবক্লালস ৮৮৭)

এই ভিসায় আসলে বর্তমানে লোক নিচ্ছে না অস্ট্রেলিয়া। ভিসাটি চালু আছে কিন্তু আবেদন করা যাচ্ছে না। তাই আর আমি এই ভিসা নিয়ে কথা বারাবো না।

উপরে যতগুলো ক্যাটাগরি নিয়ে আলোচনা করলাম, আপনি প্রত্যেক্টি ভিসায়ই স্থায়ী ভাবে অস্ট্রেলিয়া থাকার অনুমতি পাবেন।

তো চলুন এবার যেনে নেই অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সালের টেম্পোরারি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য কি কি ক্যাটাগরিতে আপনি আবেদন করতে পারবেন।

আর পড়ূনঃ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট কিভাবে পাবো। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট করতে কি কি লাগে।

অস্ট্রেলিয়া টেম্প্রোরারি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪

অস্ট্রেলিয়া টেম্প্রোরারি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪

আপনারা তো বুঝেই গেছেন এই ভিসায় আপনি অস্ট্রেলিয়া গেলে পারমানেন্ট ভাবে থাকতে পারবেন না। আর টেম্পোরারি ভিসায়ও আপনি চার ধরনে ক্যাটাগরি পেয়ে যাবেন আবেদন করার জন্য। আগে চারটি ক্যাটাগরির নাম গুলো লিখে তারপরে এগুলোর বিস্তারিত লিখবো। আপনারা একটু মনোযগ দিয়ে পরেন।

১। টেম্পোরারি স্কীল্ড সোরটেজ ভিসা (সাবক্লাস ৪৮২)।
২। টেম্পোরারি গ্রাজুয়েট ভিসা (সাবক্লাস ৪৮৫)
৩। স্কীল্ড রিকোগ্নাইজড গ্রাজুয়েট ভিসা (সাবক্লাস ৪৭৬)
৪। স্কীল্ড রিজিওনাল ভিসা (সাবক্লাস ৪৮৯)

টেম্পোরারি স্কীল্ড সোরটেজ ভিসা (সাবক্লাস ৪৮২)

অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সালের সাবক্লাস ৪৮২ এ আপনি একটি ক্যাটাগরিতেই আবেদন করতে পারবেন। নিচে বিস্তারিত বলে দিচ্ছি।

সোর্ট-টার্ম স্ট্রীম

এই ভিসায় আবেদন করতে হলে আপনাকে খোজ রাখতে হবে কোন কোম্পানিতে কোনো একটি কাজের জন্য লোক পাওয়া যাচ্ছে না। আপনি যদি সেই কাজটি করতে পারেন তাহলে আপনি এই ভিসায় আবেদন করতে পারবেন।

১। এই ভিসায় আপনি প্রায় ২ থেকে ৪ বছর অস্ট্রেলিয়ায় থাকতে পারবেন।
২। খরচ হবে প্রায় বাংলাদেশি টাকায় ১,০৩,০১৭ টাকা।

টেম্পোরারি গ্রাজুয়েট ভিসা (সাবক্লাস ৪৮৫)

এই ভিসাটা হলো ইন্টারনেশোনাল স্টুডেন্ট এর জন্য। ধরেন আপনি বাহির থেকে পড়ালেখা করে আসছেন এবং এমন একটি স্কীল অর্জন করলেন যেটা স্পেসিফিক কাজের সাথে মিলে যায় যেটা অস্ট্রেলিয়া চায়।

১। আপনি এখানে সর্বোচ্চ ১৮ মাসের মতো থাকতে পারবেন।
২। খরচ হবে ১,৩৪,২২২ টাকা।

আরো পড়ূনঃ র্তুগাল যাওয়ার সহজ ৩ টি উপায় ২০২৪

স্কীল্ড রিকোগ্নাইজড গ্রাজুয়েট ভিসা (সাবক্লাস ৪৭৬)

আপনি সাবক্লাস ৪৭৬ ভিসায় সর্বোচ্চ ১৮ মাসের মতো অস্ট্রেলিয়ায় থাকতে পারবেন। আর এই ভিসায় খরচ অনেক কম হবে। বাংলাদেশি টাকায় ৩২, ৯৫৬ টাকা।

১। আপনার বয়স ৩১ বছরের ভিতরে হতে হবে।
২। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া স্টুডেন্ট রাই শুধু আবেদন করতে পারবেন।

বর্তমানে এই তিনটি ভিসায় আপনি অস্ট্রেলিয়াল যাওয়ার জন্য এবং কাজ করার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

অস্ট্রেলিয়া ভিসা ফি ফর বাংলাদেশী

আমি প্রত্যেকটি ভিসার ক্যাটাগরিতেই ভিসার ফি কত লাগবে তা লিখে দিয়েছি। কারণ এখানে তো দেখলেনি কত ধরনের ভিসা, আর প্রত্যেকটি ভিসার ফি আলাদা। কোনো ভিসায় ৩ লক্ষ টাকা লাগে আবার কোনোটিতে মাত্র ৪০ হাজার টাকা।

সর্বোশেষে, আপনারা আশা করি পুরো পোস্টি পরেছেন এবং আপনাদের প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়েছেন। এই আরটিকেল রিলেটেড কোন প্রকার প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করবেন। আমি যত দ্রুত সম্ভব আপনার প্রশেনের জবাব দিবো। সবাইকে ধন্যবাদ শেষ পর্যন্ত আরটিকেলটি পড়ার জন্য।

Leave a Comment